মো. মনজুরুল হান্নান
কৃষিই বাংলাদেশের প্রাণ। খাদ্য শস্য, উদ্যান ফসল, পাট, চা, পোলট্রি, ডেইরি, ফিশারিজ, বনজবৃক্ষ, মধু ইত্যাদির সমন্বয়ে এদেশের কৃষি খাত। বাংলাদেশে কৃষিপণ্য এবং খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পসহ কৃষিনির্ভর শিল্পের সম্ভাবনা ব্যাপক। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সাথে এদেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান বেড়ে চলছে। যার কারণে মানুষের খাদ্যোভ্যাস পরিবর্তন হচ্ছে। মানুষ এখন প্রক্রিয়াজাত কৃষিজ খাদ্যসামগ্রীর দিকে ঝুঁকে পড়ছে। একইভাবে উন্নত বিশ^ এমন কি উন্নয়নশীল দেশসমূহে জবধফু ঃড় ঊধঃ এবং জবধফু ঃড় ঈড়ড়শ পর্যায়ের খাদ্যের চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বাংলাদেশে প্রাথমিক খাদ্য পণ্য, জবধফু ঃড় ঈড়ড়শ এবং জবধফু ঃড় ঊধঃ পর্যায়ে খাদ্য সামগ্রী উৎপাদনে ছোট বড় অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।
কৃষিজ খাদ্যের নতুন নতুন আইটেম তৈরি ও পরিবেশবান্ধব প্যাকেটজাত করে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। ইতোমধ্যেই বেশ কিছু খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পপ্রতিষ্ঠান নিজস্ব ব্র্যান্ডের কৃষিজ খাদ্য পণ্য।
কৃষিজ খাদ্যের নতুন নতুন আইটেম তৈরি ও পরিবেশবান্ধব প্যাকেটজাত করে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। ইতোমধ্যেই বেশ কিছু খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পপ্রতিষ্ঠান নিজস্ব ব্র্যান্ডের কৃষিজ খাদ্য পণ্য রপ্তানিতে সক্ষমতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের তালিকা ছক-১-এ দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ হিসেবে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য শিল্পের কাঁচামাল জোগানদানে সক্ষম। প্রাথমিক কৃষি পণ্যের মূল্য ও বিপণন নিশ্চিয়তা প্রদান করা হলে খাদ্য শিল্পের মূল কাঁচামালের জোগান নিয়ে তেমন কোন সমস্যা হবে না। দেশের এ সক্ষমতার কারণেই খাদ্য শিল্প বিকশিত হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রাথমিক কৃষি পণ্যের মান নির্ধারণ করা জরুরি। এজন্য কৃষি পণ্য উৎপাদনে এড়ড়ফ অমৎরপঁষঃঁৎব চৎধপঃরপব এবং ঈড়হঃৎধপঃ ঋধৎসরহম প্রবর্তন সময়ের দাবি। বিএসটিআই কর্তৃক বেশ কিছু খাদ্যপণ্যের ইউঝ ঝঃধহফধৎফ নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশে খাদ্যের নিরাপদ অবস্থা নিশ্চিত করার জন্য নিরাপদ খাদ্য আইন- ২০১৩ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন বোর্ড বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষণ ল্যাব অ্যাক্রিডিটেশনকরণের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এবং কৃষি সংশ্লিষ্ট ইন্সটিটিউট, মৎস্য অধিদপ্তর ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এর ল্যাবরেটরিসমূহের জনবল ও পরীক্ষা যন্ত্রপাতির সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ চলমান। বাংলাদেশে খাদ্য শিল্পের উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণের জন্য বিনিয়োগ বোর্ড, বিডা, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিসিক, বিএসটিআই, এফএসটিআই, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, মৎস্য অধিদপ্তর, হর্টেক্স ফাউন্ডেশন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো এবং কৃষি মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ বেশ কিছু মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠান কাজ করে চলেছে।
বাংলাদেশ হতে এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশে^র ১১৮টি দেশে কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি করা হচ্ছে। বাংলাদেশি খাদ্য পণ্য ঊঃযহরপ মার্কেট এর পাশাপাশি টঢ় ঝঃৎবধস মার্কেটে প্রবেশে সক্ষম হচ্ছে। বাংলাদেশে কম্পোজিট ফুড ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তোলার এখনই উপযুক্ত সময়। বাংলাদেশি কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের প্রধান প্রধান আমদানিকারক দেশ হচ্ছে ইউএই, সৌদিআরব, কাতার, ইউএসএ, কানাডা, ইউকে ইত্যাদি দেশ।
হর্টেক্স ফাউন্ডেশন কৃষিপণ্য রপ্তানিতে প্রযুক্তি গত ও বিশেষায়িত পরামর্শমূলক সেবা দিয়ে চলেছে। হর্টেক্স ফাউন্ডেশনের মূল উদ্দেশ্য হলো গুণগত ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন তাজা, প্রক্রিয়া জাতকৃত ও হিমায়িত শাকসবিজ, ফলমূল, আলু ও অন্যান্য কৃষিপণ্য সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা এবং বাজারজাতকরণে কৃষক, উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারকদের দক্ষতাউন্নয়ন, পরামর্শ, বাজার তথ্য ও প্রযুক্তিগত সহায়তা সেবা প্রদান করা। এর মাধ্যমে আগামী দিনে দেশে এবং বিদেশে কৃষি পণ্যের বাজার বিকশিত এবং স্থিতিশীল হয়ে বাণিজ্যিক কৃষি স্থায়িত্ব রূপ পাবে।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক, হর্টেক্স ফাউন্ডেশন, সেচ ভবন, মানিকমিয়া এভিনিউ, ঢাকা। ফোন : ৯১২৫১৮১, ই-মেইল : hortex@hortex.org